
যা যা জানতে পারবেন :
প্রশ্নঃ পহেলা বৈশাখ নিয়ে বাংলা অনুচ্ছেদ লিখ ।
উত্তরঃ
পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ
পহেলা বৈশাখে বাংলা নববর্ষ উৎসব পালিত হয় কারণ পহেলা বৈশাখ বাংলা বৎসরের প্রথম দিন। পহেলা বৈশাখ চিরাচরিত ঐতিহ্যের সাথে সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়। পহেলা বৈশাখ পৃথিবীর সকল বাঙ্গালি তথা আমাদের ঐতিহা ও সংস্কৃতির অংশ। তাই আমাদের দেশে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে প্রবল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনটি পালিত হয়। সকলেই আশা করে যে পহেলা বৈশাখ প্রতিটি মানুষের জীবনে সুখ ও শান্তি বয়ে আনবে। রমনা পার্কের বটমূলে ভােরে দিবসটির শুভ সূচনা হয়। রমনা বটমূলের অনুষ্ঠানসমূহ পহেলা বৈশাখের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। রমনা বটমূলে হাজার হাজার নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী চিরাচরিত বাঙ্গালির পােষাক পায়জামা-পাঞ্জাবী ও মেয়েরা লাল পাড়ের সাদা শাড়ি। ও ব্লাউজ পড়ে এ অনুষ্ঠানে যােগ দেয়। পহেলা বৈশাখে গ্রামবাংলার বিভিন্ন জায়গায় বৈশাখী মেলার আয়ােজন করা হয়। ব্যবসায়ী ও দোকানদারগণ দিবসটি উপলক্ষ্যে ‘হালখাতা খুলে এবং তাদের বন্ধু-বান্ধব ও মকেলদের মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করান। শহরের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন দিবসটিকে বরণ করার জন্য নানা ধরনের অনুষ্ঠানমালার আয়ােজন করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার (ইফা) ছাত্র ও শিক্ষকগণ সকাল ৯.০০ প্রতিষ্ঠান চত্বর থেকে এক মনােজ্ঞ শােভাযাত্রা বের করে । দেশের সংবাদপত্র বিশেষ কোড়পত্র বের করে এবং বাংলাদেশ বেতার ও বিভিন্ন টিভি চ্যানেল দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে। এ দিবসে মানুষ পরস্পরকে পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা জানায় ও নতুন বৎসরে তাদের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে।
—সমাপ্তি—
মঙ্গল শোভাযাত্রা
মঙ্গল শোভাযাত্রা হলো বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে আয়োজিত একটি তুলনামূলকভাবে নতুন বর্ষবরণ উৎসব। বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে বাংলাদেশের ঢাকা শহরে এটি প্রবর্তিত হয়।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার (ইফা) ছাত্র ও শিক্ষকগণ সকালে প্রতিষ্ঠান চত্বর থেকে এক মনােজ্ঞ শােভাযাত্রা বের করে ।
আরও জানুনঃ
সব গুরুত্বপূর্ণ বাংলা অনুচ্ছেদগুলোর তালিকা
পহেলা বৈশাখ দিবস ও হিন্দুত্ব
হিন্দুরা বিশ্বাস করতো যে , পহেলা বৈশাখে ভালো খাদ্য খেলে, ভারো পোশাক পড়লে সারাবছর ভালো খাওয়া পড়া যাবে। এদিনে নতুন কাপড় পরলে পুরনো দিনের সব জরাজীর্ণ মুছে যাবে , আনন্দে ভরে যাবে আগামী দিনগুলো। এছাড়া এই দিনটিতে হিন্দুদের অনেকগুলো পূজা উৎসবও রয়েছে।
মঙ্গল শোভাযাত্রার সমগ্র চিত্রই হচ্ছে হিন্দুত্বের উৎস ও ভিত্তিভূমি
মঙ্গল শোভাযাত্রায় যে সূর্য, ইঁদুর, হনুমান, গাভী, ক্ষ্যাপা ষাঁড়, ঈগল, পেঁচা, রাজহাস, সিংহ, বাঘ, হাঁস, ময়ূর, মহিষ, বহন করা হয় সেগুলো হিন্দুদের বিভিন্ন উপাসনার বিশ্বাসেরই উপাত্ত। জেনে রাখুন, ইঁদুর গণেশের বাহন, ঈগল বিষ্ণুর বাহন, সিংহ বাঘ দুর্গার যানবাহন, হাঁস ব্রহ্মা ও স্বরস্বতীর বাহন, মহিষ মৃত্যু দেবীর বাহন, ক্ষ্যাপা ষাঁড় শিবের বাহন, পেঁচা মঙ্গলের প্রতীক ও লক্ষীর বাহন, ময়ূর কার্তিকের বাহন ইত্যাদি।
মঙ্গল শোভাযাত্রায় সূর্যের প্রতিকৃতি দেখা যায়। এটা হচ্ছে হিন্দুদের সূর্য দেবতার প্রতিকৃতি। সূর্য আর্যদের উপাস্য দেবতা (সুধীরচন্দ্র সরকার সংকলিত পৌরাণিক অভিধান, পৃ. ৪৫১)। উইকিপিডিয়ায় বলা হয়েছে, হিন্দুধর্মের প্রধান সৌর দেবতা সূর্য। কোনো কোনো মতে, তিনি ইন্দ্রের পুত্র। হিন্দুধর্মীয় সাহিত্যে সূর্যকে যথেষ্ট গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। কারণ তিনিই একমাত্র দেবতা যাকে মানুষ প্রতিদিন প্রত্যক্ষ করতে পারে। বৈষ্ণবেরা সূর্যকে সূর্যনারায়ণ বলে থাকেন। শৈব ধর্মতত্ত্বে, শিবের অষ্টমূর্তি রূপের অন্যতম হলেন সূর্য (উইকিপিডিয়া; ৪ এপ্রিল ২০১৭ সংগৃহীত)। আসলে শোভাযাত্রায় বহনকৃত সকল মুখোশ-ফটোই যে হিন্দুধর্ম থেকে গ্রহণ করা হয়েছে এটা সর্বজনস্বীকৃত।